আপনি কি ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস খুলতে চান? তাহলে আজকের আর্টিকেলে ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস খোলার নিয়ম জেনে নিবেন। এবং তারপরে খুব সহজেই আপনি ইসলামী ব্যাংকে একটি ডিপিএস খুলতে পারেন। তাহলে চলুন জেনে নিব ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস খোলার সকল তথ্যাবলি একসঙ্গে আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলে।
ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস কি?
যেকোনো ব্যাংকে যদি আপনি কোন টাকা সঞ্চয় করতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে ডিপিএস খুলতে হয়। আর সেরকমভাবে ইসলামী ব্যাংকেও ডিপিএস সিস্টেম রয়েছে। আপনি চাইলে অর্থ সঞ্চয় করতে পারেন ইসলামী ব্যাংকে সহজেই। সাধারণত আপনি প্রতি কয়েক দিন পর পর নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা রাখতে পারবেন ইসলামী ব্যাংকে। তারপরে আপনার জমাকৃত অর্থ গুলো পরবর্তীতে তুলে ফেলতে পারবেন যখন আপনার প্রয়োজনীয় মনে হবে।
আর অবশ্যই আপনাকে তার জন্য ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস খোলার নিয়ম জানতে হবে। ইসলামী ব্যাংকে একটি ডিপিএস একাউন্ট খুলতে হলে আপনার কিছু বিশেষ কাগজ পাতির প্রয়োজন হবে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইসলামী ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। আপনার ভোটার আইডি কার্ডের পিছন এবং সামনের ছবি দরকার হবে এবং পাসপোর্ট সাইজের আপনার রঙ্গিন ছবি প্রয়োজন পড়বে। আপনি সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা থেকে ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত ডিপিএস রাখতে পারবেন।
ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস খোলার নিয়ম
ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে যে দরকারি ডকুমেন্টের কথা বলেছি সেই ডকুমেন্ট সমূহ আপনি জমা করার পরে আপনাকে এখন অ্যাকাউন্ট খোলার প্রসেসটি মেনে চলতে হবে। আর এখন খোলার প্রসেস শুরু হয় সর্বপ্রথম ইসলামী ব্যাংকে যাওয়ার মাধ্যমে। আপনি যদি অ্যাকাউন্টটি খুলতে চাইলে তাহলে আপনাকে সরাসরি ব্যাংকে যেতে হবে।
আপনার এলাকায় অবস্থিত যে কোন ব্রাঞ্চের মধ্যে গিয়ে খুব সহজে আপনার ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন। তারপর আপনাকে গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টগুলো তাদেরকে দিতে হবে। এবং তার সঙ্গে সঙ্গে আপনাকে আপনার ইনকামের মাধ্যম এবং চাকরির প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট দিতে হবে। এছাড়া যদি আপনার ইসলামী ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে কোন মাধ্যম থেকে টাকা এসে থাকে তাহলে আর কথাই নেই।
সকল ডকুমেন্ট অর্থাৎ সকল কিছু জমা দেওয়ার পরে তারা আপনাকে ডিপিএস খোলার জন্য পারমিশন দিবে এবং তারপরে আপনাকে একটি ফরম দিবে। সেই ফরমে আপনার প্রয়োজনীয় তথ্যাবলি পূরণ করতে হবে। যেমন ধরুন আপনার নাম, ঠিকানা, বাবার নাম, মায়ের নাম, ইনকামের প্রধান উপায়, ছবি ইত্যাদি। সবকিছু যুক্ত করে দেয়ার মাধ্যমে আপনি আপনার ডিপিএস একাউন্টটি খুব সহজেই তৈরি করতে পারবেন।
ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস তালিকা
সাধারণত নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ডিপিএস অ্যাকাউন্টট খোলা যায়। যেমন ধরুন ৩ বছর, ৪ বছর, ৫ বছর ইত্যাদি। আপনি যদি ডিপিএস এর মেয়াদ সঠিকভাবে পূর্ণ করতে পারেন, তাহলে আপনার জমাকৃত অর্থের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট পরিমাণ মুনাফা পাবেন। বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকে যে সকল ডিপিএস চালু রয়েছে নিচে তার তালিকা দেওয়া হল।
- ইসলামী ব্যাংক মুদারাবা সেভিংস ব্যাংক পেনশন স্কিম
- ইসলামী ব্যাংক মুদারাবা সেভিংস হজ স্কিম
- ইসলামী ব্যাংক মুদারাবা বিবাহ সঞ্চয় প্রকল্প
- ইসলামী ব্যাংক মোহর সেভিংস স্কিম
এইসব ডিপিএস গুলোর মেয়াদ হয়ে থাকে তিন বছর পাঁচ বছর এবং দশ বছর। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী নির্দিষ্ট মেয়াদী ডিপিএস অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন।
ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস লাভ-ক্ষতি
ইসলামী ব্যাংকে সাধারণত ৩ বছর, ৫বছর ও ১০ বছরের জন্য ডিপিএস স্কিম একাউন্ট খোলা যায়। আপনি যদি তিন বছরের জন্য ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস করেন তাহলে ৫.৮০ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। একই ভাবে যদি পাঁচ বছরের জন্য ইসলামী ব্যাংকে ডিপিএস বা স্কিন তৈরি করেন তাহলে মুনাফার অংশ দাঁড়াবে ছয় শতাংশে। এবারে আপনি যদি দশ বছরের জন্য ডিপিএস করেন তাহলে মুনাফা বেড়ে দাঁড়াবে ৬.২০ শতাংশে।
ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস লাভ কত?
ইসলামী ব্যাংকের ডিপিএস এর লাভ মোটামুটি ভাবে ভালোই রয়েছে। বর্তমান সময়ে বলতে গেলে ইসলামী ব্যাংকে ভালো পরিমাণ মুনাফা দেওয়া হচ্ছে। কেননা আপনাকে সর্বনিম্ন ৫.৮০ শতাংশ মুনাফা দেওয়া হবে এবং সর্বোচ্চ ১০ বছরের জন্য পেয়ে যাচ্ছেন ৬.২০ শতাংশ। তাই বলা যেতে পারে ইসলামী ব্যাংকের মুনাফার পরিমান মোটামুটি ভালো রয়েছে অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায়। এছাড়া ইসলামী ব্যাংক একটি অসাধারণ ব্যাংক যা দেশের অন্যতম ব্যাংকের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে। তাই আপনি যদি ডিপিএস করতে চান তাহলে ইসলামী ব্যাংকে করতে পারেন।
সর্বশেষঃ আজকের এই আর্টিকেলের সাহায্যে আপনি নিশ্চই জানতে পেরেছেন কিভাবে ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়। সেই সাথে ইসলামী ব্যাংকের ডিপিএস সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে। ইসলামী ব্যাংকের ডিপিএস সম্পর্কিত কোন ধরনের মতামত অথবা জানার থাকলে নিচের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।।