আজকের এই আর্টিকেলে কাজী নজরুল ইসলাম কবিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। আমরা সকলেই জানি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম অসংখ্য শ্রেষ্ঠ কবিতা উপহার দিয়ে গেছেন। এই আর্টিকেলে সম্পূর্ণ বাছাই করে নজরুলের শ্রেষ্ঠ কবিতাগুলো শেয়ার করা হয়েছে। যে সকল কবিতার জন্য কবি নজরুল শ্রেষ্ঠত্ব পেয়েছেন। আপনাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ ভালো করে পড়ে দেখার জন্য।
আমরা অনেকে কাজী নজরুলের শ্রেষ্ঠ কবিতাগুলো পড়ার জন্য খুঁজে থাকি। তাদের কথা মাথায় রেখে আমরা বাছাই করে এ সকল কবিতাগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। আমাদের বিশ্বাস এই কবিতাগুলো আপনাদের ও অনেক ভালো লাগবে। কেননা শেয়ার করা কবিতাগুলো যারা পাঠ করেছে সকলেই কবিতাগুলোর প্রেমে পড়েছে। বেশি কথা না বাড়িয়ে আর্টিকেলের মূল্ বিষয়ে যাওয়া যাক।
কাজী নজরুল ইসলাম এর জীবনী
কাজী নজরুল ইসলাম ২৪ মে ১৮৯৯ সালে (বাংলাঃ ১১ই জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দ) আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে (ভারত পশ্চিমবঙ্গ) জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম কাজী ফকির আহমদ এবং মাতা জাহেদা খাতুন। কাজী নজরুলের প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ ধর্মীয় ছিল। তার বাবা যেহেতু স্থানীয় মসজিদের ইমাম এবং মাযারের খাদেম ছিলেন তিনিও বাবার ন্যায় স্থানীয় মসজিদে মুয়াজ্জিনের কাজ করেছিনেন।
আরও পড়ুনঃ কাজী নজরুল ইসলাম এর প্রেমের কবিতা
স্কুল জীবনের গণ্ডি পার না হতেই তিনি ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান করেছিনেন। এছাড়া কৈশোরে তিনি বিভিন্ন থিয়েটার দলে যোগ দিয়ে কবিতা, নাটক ও সাহিত্য জ্ঞান লাভ করতে সামর্থ হন। এরপর তিনি দীর্ঘ ২৩ বছর সাহিত্য চর্চা করেন। তিনি তার সাহিত্য জীবনে অসংখ্য কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, গান সকল বিষয়ে সমানভাবে অবদান রেখেছেন।
বিদ্রোহী মনোভাব কবিতার জন্য তিনি বিদ্রোহী কবি নামে খ্যাতি অর্জন করেন। এছাড়া তার এই বিদ্রোহী কবিতার জন্য ব্রিটিশ ভারত সরকার রাজদ্রোহকারী অপরাধে তাকে কারাবরণ দেয়।
জীবনের মধ্য বয়সে এসে কবি নজরুল হঠাৎ মারাত্মক স্নায়বিক (পিক্স ডিজিজ) আক্রান্ত হলে তার সকল মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। যার কারণে দীর্ঘ ৩৪ বছর আমৃত্যু পর্যন্ত কাজী নজরুল ইসলাম কবিতা লেখা ও সাহিত্য কর্ম থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকেন।
বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ১৯৭২ সালে সপরিবারে ঢাকায় আনা হয়। ১৯৭৬ সালে কবিকে বাংলাদেশের জাতীয়তা প্রদান করা হয় এবং একই বছর বাংলা সাহিত্যের মহান গুণী কবি ২৯ শে আগস্ট ১৯৭৬ সালে (বাংলাঃ ১২ই ভাদ্র ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ) ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
কাজী নজরুল ইসলাম কবিতা
এক নজরের আলোচনা করা হবে কাজী নজরুল ইসলাম কবিতা সমগ্র সম্পর্কে যা সম্পূর্ণ বাছাই করা। আপনাদের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে কবিতাগুলো মনের মন হবে এবং খুবি ভালো লাগবে। কবিতাগুলো অবশ্যই ভালো করে মন থেকে পড়ে দেখবেন।
কবিতার নামঃ সংকল্প
কবিঃ কাজী নজরুল ইসলাম
থাকব না কো বদ্ধ ঘরে, দেখব এবার জগৎটাকে,-
কেমন করে ঘুরছে মানুষ যুগান্তরের ঘুর্ণিপাকে।
দেশ হতে দেশ দেশান্তরে
ছুটছে তারা কেমন করে,
কিসের নেশায় কেমন করে মরছে যে বীর লাখে লাখে,
কিসের আশায় করছে তারা বরণ মরণ-যন্ত্রণাকে।কেমন করে বীর ডুবুরী সিন্ধু সেঁচে মুক্তা আনে,
কেমন করে দুঃসাহসী চলছে উড়ে স্বর্গ পানে।
জাপটে ধরে ঢেউয়ের ঝুঁটি
যুদ্ধ-জাহাজ চলছে ছুটি,
কেমন করে আনছে মানিক বোঝাই করে সিন্ধু-যানে,
কেমন জোরে টানলে সাগর উথলে ওঠে জোয়ার বানে।কেমন করে মথলে পাথার লক্ষী ওঠেন পাতাল ফুঁড়ে,
কিসের অভিযানে মানুষ চলছে হিমালযয়ের চুড়ে।
তুহিন মেরু পার হয়ে যায়
সন্ধানীরা কিসের আশায়;
হাউই চড়ে চায় যেতে কে চন্দ্রলোকের অচিন পুরেঃ
শুনবো আমি, ইঙ্গিত কোন ‘মঙ্গল’ হতে আসছে উড়ে।।কোন বেদনার টিকিট কেটে চন্ডু-খোর ঐ চীনের জাতি
এমন করে উদয়-বেলায় মরণ-খেলায় ওঠল মাতি।
আয়ার্ল্যান্ড আজ কেমন করে
স্বাধীন হতে চলছে ওরেঃ
তুরষ্ক ভাই কেমন করে কাঁটল শিকল রাতারাতি!
কেমন করে মাঝ গগনে নিবল গ্রীসের সূর্য-বাতি।।রইব না কো বদ্ধ খাঁচায়, দেখব এ-সব ভুবন ঘুরে-
আকাশ বাতাস চন্দ্র-তারায় সাগর-জলে পাহাড়-চুঁড়ে।
আমার সীমার বাঁধন টুটে
দশ দিকেতে পড়ব লুটেঃ
পাতাল ফেড়ে নামব নীচে, ওঠব আবার আকাশ ফুঁড়েঃ
বিশ্ব-জগৎ দেখব আমি আপন হাতের মুঠোয় পুরে।।