মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের প্রত্যেককে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ স্বাস্থ্য দিয়েছে। তবে এই স্বাস্থ্যে অনেকেই নিজেকে সন্তুষ্ট করতে পারছে না। নিজে সন্তুষ্ট থাকলেও। আশেপাশের মানুষ জন তাকে সন্তুষ্ট থাকতে দিচ্ছে না। কেননা চিকন হলে অনেকেই মানুষকে বিভিন্ন ধরনের কথা শুনিয়ে থাকে। এতে করে তার মাঝে কি ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে তা শুধুমাত্র সে ব্যক্তি বোঝে। যারা চিকন থেকে কিভাবে দ্রুত মোটা হওয়া যায় তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি। কেননা এই পোস্টে মোটা হওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কিত টিপস সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।
অনেক সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দিবো কিভাবে মোটা হতে হয়। তবে জেনে রাখা ভালো একদম মোটা হলে যে মানুষকে ভালো লাগে তাও কিন্তু না। লক্ষ্য করলে দেখতে পারবেন সমাজের অধিকাংশ মোটা মানুষ চিকন হওয়ার চিন্তা করে। বিপরীত পক্ষে মোটা হওয়ার জন্য আবার চিকন মানুষেরা অনেক বেশি পরিশ্রম করে। মোটা হওয়া কিংবা চিকন হওয়ার ক্ষেত্রে খাদ্য তালিকা পরিবর্তন করা উচিত। আপনি মোটা হতে চান কিংবা চিকন হতে চান দুটোর ক্ষেত্রেই খাদ্য তালিকা পরিবর্তন অত্যাবশ্যক।
মোটা হওয়ার সহজ উপায়
আপনি অধিক পরিশ্রমের মাধ্যমে যদি মোটা হতে না পারেন সে ক্ষেত্রে অবশ্যই অনেক উপায় রয়েছে। আর আমার দেওয়া টিপ যদি আপনি ভালভাবে ফলো করতে পারেন তাহলে আশা করছি খুব অনায়াসে আপনি এক মাসের মাঝেই মোটা হতে পারেন। এখন যেহেতু চিকন মানুষ খুঁজে বের করা সহজ। আবহাওয়া মানুষের প্রতি বিরূপ প্রভাব ফেলায় এই চিকন হওয়া মানুষের সংখ্যা বেশি। তবে চিন্তা নেই যখন মোটা হওয়ার বেশি কঠিন নয়।
যদি আপনি চিকন হতে চান তাহলে যেমন আপনাকে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে হয়। ঠিক তেমনিভাবে আপনাকে মোটা হওয়ার জন্য কিছু খাদ্যাভ্যাস গ্রহণ করতে হবে। মোটা হওয়ার জন্য মূলত পরিমিতভাবে খেতে হবে। তাই বলে আপনি কিছুক্ষণ পরপর খেতে থাকবেন এটা ভুল কথা। তাহলে চলুন কখন কিভাবে কোন সময় যা খাবেন সেই সম্পর্কে জানা যায়।
পরিমিত খাবার গ্রহণ – কিভাবে মোটা হওয়া যায়
পরিমিত খাবার বলতে আপনি যে সময় খাবার খাচ্ছেন সে সময় লক্ষ্য রেখে ভালোভাবে খাদ্য গ্রহণ করা। অর্থাৎ পূর্বে যেই পরিমাণ খাদ্য খেতেন তার তুলনায় একটুখানি খাবার পরিমাণ বৃদ্ধি করা। এতে করে দ্রুত নিজের দেহে মাংস লাগতে শুরু করে। তবে খাবার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম রয়েছে। রাতে ঘুমানোর সময় অবশ্যই আপনি কয়েকটি বাদাম কিসমিস কিংবা শুকনো জাতীয় খাবার পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন। সকালে উঠে সেই সব খাবারগুলো গ্রহণ করবেন। নিয়মিত এভাবে তিন থেকে চার প্রকারের শুকনো খাবার ভিজিয়ে রেখে সকালে দুপুরে এবং রাতে খাওয়া অনেক বেশি উপকারী।
তাছাড়া যখন ভাত খাবেন তখন চেষ্টা করবেন দিনে একটি করে ডিম খেতে। এছাড়াও ডিমের পাশাপাশি দুধ এবং কলা খাওয়া অবস্থায়। দূরে যেমন রয়েছে পুষ্টি তেমনি রয়েছে মোটা হওয়ার জন্য পরিমিত শর্করা। তাছাড়া কলা খেলে মোটা হবে তা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। আর অবশ্যই চর্বি জাতীয় খাবার আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
খাদ্য তালিকায় চর্বিযুক্ত খাবার থাকলে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। চর্বিযুক্ত খাবার বলতে বুঝাতে চাচ্ছি মাংস জাতীয় খাবার তা না। অর্থাৎ আপনি চাইলে বিভিন্ন ধরনের বাজারে পাওয়া যাই এমন ধরনের চর্বিযুক্ত খাবার খেতে পারে। এরই মধ্যে চিজ অন্যতম একটি খাদ্য।
চকলেট খাবেন
চকলেট কেবলের যেমন আমাদের দেহে অনেক ক্ষতি হতে পারে তেমনি চকলেট খাওয়ার মাধ্যমে দেহে উপকারও হয়ে থাকে। আর মোটা হওয়ার ক্ষেত্রে চকলেট অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে চকলেট খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই মনে রাখতে হবে সে চকলেটে যেন অবশ্যই ফ্ল্যাট থাকে। এতে করে আপনার দেহের মধ্যে প্ল্যাটি এসিড জমা হবে। যা মোটা হতে অত্যন্ত সহযোগিতা করবে।
চিন্তামুক্ত থাকা
মূলত চিন্তামুক্ত থাকলে যেমন আমাদের শরীরের উপকার হয় তেমনি স্বাস্থ্যবৃদ্ধি এবং ওজন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আরেকটি মানুষ যখনই চিন্তা মুক্ত থাকে তখন সে অনেক কিছু করতে পারে। আর অবশ্যই বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যে চিন্তা মুক্ত থাকলে মোটা হওয়া যাবে। সুতরাং সব সময় চেষ্টা করবেন পারিবারিক কিংবা অন্যান্য চিন্তা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে। আর চিন্তা মুক্ত থাকলে অবশ্যই একদিন না একদিন আপনি মোটা হবেন।
হস্তমৈথুন থেকে বিরত থাকুন
অনেকে আছেন যারা হস্তমৈথুন অনেক বেশি পরিমাণ করে থাকে। এর মাধ্যমে তাদের দেহ থেকে হরমোন অনেক বেশি কমে যায়। এর ফলে মূলত তারা মোটা হতে পারে না। সুতরাং অবশ্যই চেষ্টা করবেন যতদিন না মোটা হচ্ছেন ততদিন পর্যন্ত হস্তমৈথুন না করা। আর এটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং ভয়াবহ সমস্যা তা কিন্তু আপনি জেনে থাকবেন। এছাড়াও ইসলাম অনুযায়ী হস্তমৈথুন সম্পূর্ণ একটি অবৈধ এবং অনেক পরিমাণে হারাম একটি কাজ।
নিয়মিত সবুজ সবজি খাওয়া
শাকসবজি আমাদের দেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম সম্পন্ন করে। এর মাধ্যমে দেহে থাকা বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য পদার্থ বের করতে সহযোগিতা করে। যার মাধ্যমে আমাদের দেহে যেসব বর্জ্য পদার্থ জমে তা বের হয়ে গেলে অনেক উপকার হয়। এর ফলে আমাদের মোটা হওয়ার যে প্রয়োজনীয় কাইটারিয়া ছিল তা পূরণ হয়ে যায়।
মোটা হতে যে সবুজ শাকসবজি খেতে হবে তা কিন্তু উল্লেখ্য। আপনি চাইলে ভাতের সঙ্গে কিংবা এমনি সবুজ শাকসবজি খেতে পারেন। শুধু সবুজ শাকসবজি নয় তার সঙ্গে চাইলে আপনি বিভিন্ন ফল-মূল খেতে পারেন। ফলমূল খাওয়ার মাধ্যমে আপনার দেহের মধ্যে পুষ্টি উপাদান বৃদ্ধি পায়।
আরো পড়ুনঃ পেঁয়াজের উপকারিতা ও অপকারিতা
পরিমিত ঘুমানো – মোটা হওয়ার জন্য কি করতে হবে
মোটা হওয়ার জন্য নিয়মিত ঘুমানো নিজের শরীরের জন্য অনেক ভালো। এক্ষেত্রে আমাদের সারাদিন যেমন পরিশ্রম হয় তেমন নিজের শরীরের প্রতি খেয়াল রাখা হয়। এর ফলে অনেক শারীরিক শান্তি উপলব্ধি করা যায়। শুধু তাই নয় বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যখন মানুষ সোজা হয় শুয়ে থাকে তখন অবশ্যই তার দেহের মাংস বৃদ্ধি পায়।
কেননা এই ক্ষেত্রে দেহের মধ্য যে চাপ সৃষ্টি হয় সারাদিন তা হারিয়ে যায়। আর সকল চিন্তা হারিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে যদি ঘুমানো হয় তাহলে অবশ্যই মোটা হবে। তাই প্রতিদিন সর্বনিম্ন আট ঘন্টা ঘুমাতে হবে যদি আপনি মোটা হতে চান।
নিয়মিত ব্যায়াম করা – মোটা হওয়ার ব্যায়াম
মোটা হওয়ার জন্য বেশ কিছু ব্যায়াম রয়েছে যা আপনি জিমে গেলে জানতে পারবেন। এজন্য পার্শ্ববর্তী জিমে কয়েক মাসের জন্য ভর্তি হতে পারেন। এবং তারপরে আপনি চাইলে খুব সহজে মোটা হওয়ার জন্য ব্যায়ামগুলো করতে পারেন। তবে আপনি যদি ঘরোয়া পদ্ধতিতে ব্যায়াম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে কিছু ব্যায়াম অবশ্যই রয়েছে।
আর সেসব ব্যায়াম করার মাধ্যমে অনায়াসে মোটা হওয়া যেতে পারে। মোটা হওয়ার জন্য প্রতিদিন আপনি দৌড়াদৌড়ি করতে পারেন। আর দৌড়াদৌড়ি করার মাধ্যমে শরীর এবং মন দুটোই ভালো থাকে। এছাড়াও হাঁটাহাঁটি করাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শেষ কথাঃ উপরের আলোচনা থেকে নিশ্চই জানতে পেরেছেন মোটা হওয়ার সহজ উপায় গুলো সম্পর্কে। ঘরোয়া পদ্ধতিতে দ্রুত মোটা হওয়ার সহজ উপায় কি তা নিয়ে আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। এ বিষয়ে যদি আপনার আরো কোনো ধরনের মতামত কিংবা জানার থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন। আল্লাহ হাফেজ।।