আমরা সকলেই একটি জায়গা থেকে অন্য জায়গাতেই মাঝে মাঝে যেয়ে থাকি। আর যাওয়ার জন্য গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে সবচাইতে দ্রুততম মাধ্যম হচ্ছে বাংলাদেশের রেলওয়ে। রেলে করে চাইলে আপনি খুব সহজেই যে কোন স্থানে খুব দ্রুত পৌঁছে যেতে পারেন। আর তাই আমাদের অনলাইনের মাধ্যমে টিকেট ক্রয় করতে হয়। কিন্তু এখনো অনেকে এই প্রশ্ন সম্পর্কে জানেনা। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করতে চলেছি বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকেট বুকিং করার নিয়ম সম্পর্কে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকেট
আগে আমাদের টিকিট কাটার জন্য কোন কিছুর প্রয়োজন হতো না। কিন্তু বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে অনলাইনে ও অফলাইনে অর্থাৎ সকল স্থানে আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়ে আপনার টিকিটটি। নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করেছে। মার্চ মাসের ১ তারিখ থেকে মূলত এই কার্যক্রমটি শুরু হয়েছে যে শুধুমাত্র ট্রেনের টিকিট কাটতে হলেই আপনার জন্ম নিবন্ধন কিংবা জাতীয় পরিচয় পত্রের দরকার হবে। এই কাজটি করা হচ্ছে সুরক্ষার জন্য সুতরাং বর্তমান সময়ে এমন কার্যক্রম চলছে।
কিন্তু কিছুদিন পূর্বেও বাংলাদেশ ট্রেনের টিকিট সহজেই কাটা যেত আর সে টিকিটগুলো কাটার জন্য শুধু লাইনে দাড়ানো হতো এবং লাইনে দাঁড়ানোর পরে আমরা সহজে কাটতে পারতাম। যে যে নিজের মত চাইলে অনলাইন এর মধ্যেও কাটতে পারতো। সুতরাং এই তথ্য মোতাবেক আপনাদের প্রয়োজন হবে জাতীয় পরিচয় পত্র তখনই যখন বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকেট বুকিং করতে চাইবেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকেট প্রাইস
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের রেলওয়েতে যে পরিমাণ দুর্নীতি রয়েছে তার ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকেট প্রাইস কখন কি রকম হয়ে থাকে তা আসলে বলা কঠিন। বিলবোর্ড এর লেখা থাকে একটা ভাড়া আর আমাদের থেকে না হয় আরেকটা ভাড়া। কিভাবে করে চলতে থাকলে তো আর হবে না। কে শোনে কার কথা আপনি যদি টিকেট নিতে চান নিন না হলে চলে যান এভাবেই আপনার সাথে ব্যবহার করা হবে। তবুও চলুন আপনাদেরকে জানিয়ে দিচ্ছি আজকে কিছু কিছু প্রাইস অর্থাৎ টিকেট কত টাকা আসরে সরকার নির্ধারিত করেছে আমাদের সাধারণ জনগণের জন্য।
অনলাইনে একটি পিডিএফ রয়েছে যেখানে বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকিট প্রাইস সম্পূর্ণ তালিকা বন্ধ করা হয়েছে। আর সেই সুবিধার্থে আপনাদের জন্য আমরা এখানে ডাউনলোড বাটন দিয়ে দিচ্ছি সেখানে ক্লিক করে সহজেই সে ফাইলটি ডাউনলোড করে নিবেন। এবং তারপরেই আপনারা সে প্রাইজটি সহজেই দেখতে পারবেন।
- টিকেট প্রাইস লিস্ট : Download
অনলাইন ট্রেন টিকেট বুকিং
টিকিট করার জন্য আপনাকে কোথাও যেতে হবে না। কেননা রয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকেট অনলাইন করার একদম মহাসুযোগ। এর মাধ্যমে কোন ধরনের কোথাও না গিয়ে শুধুমাত্র ইনফরমেশন পূরণ করেই আপনি চাইলে টিকিট করে ফেলতে পারবেন। তাহলে চলুন বিস্তারিত জেনে নিই অনলাইন ট্রেন টিকেট বুকিং নিয়ম সম্পর্কে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকেট কাটার নিয়ম
আমাদের বাংলাদেশে বর্তমান চলমান টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধ এছাড়াও বিনা টিকিটে ভ্রমণে জরিমানা করা ও ভাড়া আদায় সহজ করার লক্ষ্যে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ট্রেনের টিকেট কাটতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধনের পরে নির্বাচন কমিশন যাচাই করার পরেই টিকেট কাটা যাবে। তবে বিদেশী নাগরিক পাসপোর্ট দেখিয়ে ট্রেনের টিকিট নিতে পারবেন।
টিকিট কাটতে হলে শুরুতে আপনাকে https://eticket.railway.gov.bd ওয়েবসাইট অথবা rail sheba app-এ গিয়ে নিবন্ধন (REGISTER) করতে হবে। মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও জন্ম তারিখ সঠিক থাকলে ঠিকানা, ইমেইল, পাসওয়ার্ড লিখে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে।
কাউন্টারে টিকেট করার ক্ষেত্রে মোবাইল থেকে মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করতে হবে BR<space>NID নম্বর <space> জন্ম তারিখ (সাল/মাস/দিন)। এসএমএস পাঠাতে হবে ২৬৯৬৯ নম্বরে। ফিরতি এসএমএসের মাধ্যমে নিবন্ধন সফল বা ব্যর্থ হয়েছে কিনা, তা জানিয়ে দেয়া হবে। এরপর কাউন্টারে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্ম-নিবন্ধন সনদ বা পাসপোর্ট দেখিয়ে টিকেট নেয়া যাবে।
আপনারা যারা জাতীয় পরিচয় পত্র এখন পর্যন্ত তারা চাইলে বাবা-মা জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে একাউন্ট করে নিজেদের নামে জন্ম নিবন্ধন আপলোড করে সহজেই খুব ভালোভাবেই টিকেটটি ক্রয় করে ফেলতে পারবেন এবং তার সাথে সাথে অবশ্যই জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি এখন থেকে সাথে রাখতে হবে। সকল কিছুতে ইসকেম এবং বাকি সবকিছু নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে অনুরোধ যেরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। তাই এখন থেকে এনআইডি কার্ড কিংবা জন্ম নিবন্ধন দুটোই সাথে রাখতে হবে।
বাইরের দেশে যারা লোক রয়েছে তারা চাইলে বাংলাদেশের টিকেট কাটতে পারবে শুধুমাত্র তাদের পাসপোর্ট এবং পাসপোর্ট এর ছবি আপলোড করে। আর এর জন্য অবশ্যই তাদের লিগাল পাসপোর্ট হতে হবে তাদের ভিসা থাকতে হবে ভিসার মেয়াদ থাকতে হবে এবং আরও বিভিন্ন কথা রয়েছে।
বর্তমান সময়ে যদি পরিচয়পত্রের সাথে টিকিটের ওপরে মুদ্রিত যাত্রীর তথ্য না মিললে যাত্রীকে বিনা টিকেট ভ্রমণের দায়ে অভিযুক্ত করা হবে অতঃপর তাকে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
দেশের প্রত্যেকটি ইফতারি এখন বর্তমানে এনআইডি কার্ড ছাড়া কোনভাবে কোন মতেই আর ট্রেনের টিকিট কাটা যাচ্ছে না। আর এই সিস্টেমটি করার জন্য অনেকেই হয়তো বা বিভ্রান্ত হচ্ছে তবে এর মাধ্যমে দেশে একটি ভালো সুবিধা হচ্ছে। কেউ আর কোন ধরনের ইসলাম করতে পারছে না এবং বাংলাদেশ সরকার সঠিকভাবে বাংলাদেশ রেল থেকে একটি ভালো পরিমাণ মুনাফ অর্জন করতে পারবে।
মোবাইল ট্রেন টিকেট বুকিং
অনলাইনে টিকিট বুকিং করতে চাইলে বর্তমান সময়ে আমাদের সঙ্গে সঙ্গে আপনারা নিজের নিয়মটি অনুসরণ করতে থাকুন তাহলে খুব সহজে আপনি মোবাইল ট্রেন টিকিট বুকিং করতে পারবেন।
প্রথমেই আপনাকে বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে এবং তারপর আপনার NID নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে ID ভেরিফিকেশন করতে হবে।
আপনার মোবাইল নম্বর, NID নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে Verify ক্লিক করুন। আপনার আইডি ভেরিফাই হলে, একটি Password সেট করুন। আপনার Email, Post Code ও ঠিকানা ইংরেজিতে লিখে Registration বাটনে ক্লিক করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করুন।
আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র এখনো হাতে না পেলে, অনলাইন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করতে পারেন। সব তথ্য অবশ্যই ইংরেজিতে লিখবেন। এখন ওয়েবসাইটের বাংলা ভার্সন প্রস্তুত হয়নি।
এরপর আপনার মোবাইলে 6 ডিজিটে একটি Verification Code পাঠানো হবে এবং Code টি দিয়ে Verify করতে চাওয়া হবে। আপনার মোবাইলে আসা Code টি 45 সেকেন্ডের মধ্যে সঠিকভাবে লিখে Continue বাটনে ক্লিক করুন। আপনার একাউন্টটি সম্পূর্ণভাবে চালু হয়ে যাবে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে একাউন্টে Log In হবে। লগইন হওয়ার পর Disclaimer এর শর্ত মেনেI AGREE করুন.
আপনি কোন সময় যেতে চাচ্ছেন এবং কোন আসন বা সিটে বসতে চাচ্ছেন সেটি আপনি সিলেট করতে পারবেন এবং তার পরে শুধু আপনার শিশুদের জন্য টিকেট কাটতে চাইলে সেটিও সিলেট করে দিতে পারবেন এবং তারপরে পারচেজ করার জন্য এগিয়ে যান বাটনে ক্লিক করতে হবে। তাহলে খুবই সহজেই আপনি এখানে আর কোন কিছু না করে শুধু পেমেন্ট করে দিলেই হয়ে যাবে।
আপনি যদি এভাবে করে করেন তাহলেই হয়ে যাবে কিন্তু তারপরে আপনাকে পেমেন্ট করতে হবে আর পেমেন্টের জন্য বিকাশ নগদ রকেট ব্যবহার করতে পারবেন এরপরে সেই পেমেন্টটি করা শেষে পারচেজ হিস্টোরি থেকে টিকিটটি ডাউনলোড করে নিতে হবে।
পেমেন্ট করার জন্য মূলত আপনি অটোমেটিক ভাবেই পেমেন্ট করতে পারবেন তার জন্য অবশ্যই আপনার টিকেটের যে মূল্যটি রয়েছে সেই মূল্যটি আপনার বিকাশ নগদ রকেট কিংবা যে অ্যাকাউন্টে পেমেন্ট করতে চাচ্ছেন সেটার মধ্যে থাকতে হবে। আর মোবাইল ব্যাংকিং গুলোর মধ্যে বিকাশ উন্নতি হবে তবে আপনি চাইলে আপনার নিজের ইচ্ছামতন বিকাশ কিংবা রোগ কিংবা রকেটে পেমেন্ট করতে পারেন।
টিকিটটি ডাউনলোড করে ফেলবেন। আর এটা অত্যন্ত জরুরী এটি না থাকলে আপনাকে টিকিট নেই বলে জরিমানা করা হবে। তাছাড়া, টিকিটের একটি কপি আপনার ইমেইলেও পাঠানো হবে। ইমেইলের Inbox Folder এ না পাওয়া গেলে SPAM Folder চেক করতে পারেন। টিকিটটি A4 সাইজের কাগজে প্রিন্ট করে নিন।
Also Read:
- ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন সুবিধা ও আবেদন পদ্ধতি
- ব্র্যাক এনজিও লোন পদ্ধতি, লোন সুবিধা ও সুদের হার
- প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়মাবলী
- কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম, ইন্টারেস্ট রেট ইত্যাদি
- কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি ও সুযোগ-সুবিধা
- ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস খোলার নিয়ম ও লাভ-ক্ষতি
ট্রেনের অগ্রিম টিকেট
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের রেলওয়েতে নিরাপদে টিকেট কাটতে হলে অনলাইনের মাধ্যমে কাটতে পারবেন। বিকাশ নগদ রকেট এবং অন্যান্য বিভিন্ন পেমেন্ট সিস্টেম রয়েছে যার মাধ্যমে সহজে পেমেন্ট করা যেতে পারে। কিন্তু ট্রেনের টিকিট পাওয়া অত্যন্ত দুঃসাধ্য। অনেক লম্বা লাইনে দাড়িয়েও শেষ পর্যন্ত আপনি হয়তো টিকিট পাবেন না। তাই, আপনি ঘরে বসেই খুব সহজে আপনার মোবাইল থেকেই ট্রেনের টিকেট বুকিং করতে পারেন।
বর্তমান সময়ে টিকিট কাটার সময় কোন নির্ধারিত নেই আপনি যেকোনো সময় টিকিট বুকিং করে ফেলতে পারবেন সহজে অনলাইনের মাধ্যমে এবং অগ্রিম ক্রিকেট ক্রয় করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি কালকে কিংবা আরও দশ দিন পরে কোথাও যেতে চাচ্ছেন তবে আজকেই চায়না টিকিট কিনে ফেলতে পারেন। কেননা এখন যত মানুষ টিকিট কেনার জন্য বসে আছে তাই তাড়াতাড়ি টিকিট না কিনলে আপনার ভাগ্যের টিকিট জুটবে না।
সর্বশেষঃ আজকের এই আর্টিকেলের সাহায্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকেট বুকিং সম্পর্কে নিশ্চই বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকেট প্রাইস, অনলাইন ট্রেন টিকেট বুকিং সহ বিভিন্ন বিষয়ে অবগত হয়েছেন। এছাড়াও যদি আপনাদের কোন বিষয়ে জানার থাকে কিংবা মতামত থাকে তাহলে নিচের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।।