আপনি হয়তোবা জেনে গেছেন গ্রামীণ ব্যাংক বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটি ব্যাংক। তাছাড়াও গ্রামীণ ব্যাংক বাংলাদেশের তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করায় বেশ নাম কুড়িয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্টাতা চেয়ারম্যান হলেন নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুস। তাহলে চলুন আপনাদের সঙ্গে আজ আমরা গ্রামীণ ব্যাংকের লোন পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করে ফেলি। আর যদি আপনার এ বিষয় সম্পর্কে জানার ইচ্ছা থাকে তাহলে আজকে আমাদের এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেলটি সম্পন্ন করতে থাকুন। সহজেই জেনে নিন গ্রামীণ ব্যাংক লোন সম্পর্কে বিস্তারিত।
গ্রামীণ ব্যাংক লোন ক্যাটাগরি
গ্রামীণ ব্যাংক বিভিন্ন ধরণের লোন দিয়ে থাকে। গ্রামীণ ব্যাংক যে সব ক্ষেত্রে ঋণ দেয় নিচে উল্লেখ করা হলো।
- গ্রামীণ ব্যাংক কৃষি লোন
- গ্রামীণ ব্যাংক বাড়ি নির্মাণ লোন
- গ্রামীণ ব্যাংক গরু ক্রয় করার লোন
- গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা লোন
- গ্রামীণ ব্যাংক মৌসুমি লোন
গ্রামীণ ব্যাংক লোন পদ্ধতি
গ্রামীণ ব্যাংক থেকে যদি লোন গ্রহন করতে চান তাহলে সর্বপ্রথমে গ্রামীণ ব্যাংকের গ্রাহক হতে হবে। আপনার অবশ্যই গ্রামীণ ব্যাংকের সাথে কমপক্ষে দুই বছরের লেনদেন থাকতে হবে। যদি গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে আপনার দুই বছরের লেনদেন না থাকলে আপনি লোন গ্রহণযোগ্যতা পাবেন না। যদি আপনার লেনদেন থাকে গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে তাহলে লেনদেন থাকলে গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তা আপনার সাথে নিজ থেকে লোনের ব্যাপারে কথা বলবে।
না, বলে তাহলে সরাসরি আপনি মূলত ব্যাংকে চলে যাবেন এবং গ্রামীণ ব্যাংকে গিয়ে আপনি আপনার একাউন্ট এর ব্যাপারে তাদেরকে জানাবেন এবং সকল ইনফরমেশন দিবেন তারপর একটি ফর্ম দেওয়া হবে। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে যে ফর্মটি আপনাকে দেওয়া হবে সেই ফর্মটি পূরণ করতে হবে এবং তাদেরকে পুনরায় জমা দিতে হবে তাহলে আপনাকে তারা লোন দেওয়ার জন্য তৈরি হবে। তারপরে ২৪ থেকে ১২ ঘণ্টার মধ্যে সহজে আপনি গ্রামীণ ব্যাংক থেকে লোন পেতে পারেন আমাদের এই গ্রামীণ ব্যাংক লোন পদ্ধতি অবলম্বনে।
গ্রামীণ ব্যাংক হোম লোন
বাড়ি বানানোর জন্য অন্যান্য ব্যাংকের মতোই গ্রামীণ ব্যাংকও একটি বিশেষ সুবিধা আওতায় গ্রামীণ ব্যাংক হোম লোন দিয়ে থাকে। আপনি চাইলে তাদের কাছ থেকে হোম লোন গ্রহণ করতে পারেন এবং নিজস্ব একটি বাড়ি তৈরি করতে পারবেন। অন্যান্য ব্যাংক যেমনভাবে ইন্টারেস্ট নিয়ে থাকে ঠিক একইভাবে গ্রামীণ ব্যাংকও ইন্টারেস্ট নিয়ে থাকে। বাংলাদেশের নিজস্ব এই ব্যাংকটি বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে খুব কম পরিমাণ ইন্টারেস্টের সঙ্গে আপনাকে লোন দিতে বাধ্য।
চাইলে আপনি আপনার বাড়ি বানানোর জন্য নিশ্চিত ভাবে এবং গ্রহণযোগ্যভাবে গ্রামীণ ব্যাংক হোম লোন গ্রহণ করতে পারেন। গ্রামীণ ব্যাংকের এই হোম লোন সিস্টেমটি এতটাই সহজে যে কেউ চাইলে গ্রহণ করতে পারবে। আর দেরি কিসের এখনি একটি গ্রামীণ ব্যাংক হোম লোন নিয়ে নিন এবং সুখে শান্তিতে বাড়ি বানান।
গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা লোন
গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা লোন হচ্ছে অন্যতম একটি লোন। শিক্ষার্থীদের জন্য তৈরি করা গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষাবন এখন বর্তমানে সবচেয়ে বেশি নেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা বর্তমানে গ্রামীণ ব্যাংক ছাড়া হয়তো অন্য কোন ব্যাংক থেকে আর শিক্ষার লোন নিচ্ছে না। আসুন বেশ কিছু শিক্ষা লোন সম্পর্কে জেনে নেওয়া যায়। কিভাবে শিক্ষা লোন পাবেন এবং এই বিষয়ে বিস্তারিত আমরা আপনার সঙ্গে এখন আলোচনা করব।
শিক্ষা জাতীর মেরুদণ্ড। কোন জাতি যত বেশি শিক্ষিত তত বেশি উন্নত। এই উন্নতকরণে, জাতিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য গ্রামীন ব্যাংক লোন দেয়। বাংলাদেশের বেশির ভাগ লোক দরিদ্র। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের জন্য লেখা পড়াটা চালিয়ে যাওয়া বেশ দুরূহ ব্যাপার। তারা পড়া লেখা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা লোন দিয়ে থাকে।
গ্রামীণ ব্যাংকের শিক্ষা লোনের হার
সেকারণের হাড় অন্যান্য বিভিন্ন ব্যাংকের তুলনায় বর্তমানে গ্রামীণ ব্যাংক বর্তমান মোটামুটি ভালোই দিচ্ছে। কেননা বর্তমান সময়ে বলতে গেলে বাংলাদেশে গ্রামীণ ব্যাংকের লোনের মধ্যে অন্যতম হলো শিক্ষা লোন। গ্রামীণ ব্যাংকের শিক্ষা লোনের হার অনেক সমৃদ্ধ। এখন গ্রামীণ ব্যাংকের শিক্ষা লোনে হার হলো ৩৮ হাজার থেকে ১ লাখ পর্যন্ত দেওয়া হয়ে থাকে।
গ্রামীণ ব্যাংক যাদেরকে শিক্ষা লোন দেয়
গ্রামীণ ব্যাংকের শিক্ষা লোন নেওয়ার জন্য বেশ কিছু নিয়মাবলী রয়েছে। অর্থাৎ, যে কেউ চাইলে এই শিক্ষা লোন নিতে পারবে না। মূলত যাদেরকে এই শিক্ষা লোন দেওয়া হয় তা নিচে দেওয়া হল –
- এমএ/এমএস/এমবিএ/ শিক্ষার্থীরা
- ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র
- মেডিকেল ছাত্র
- স্নাতক বিষয়ের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
- তাছাড়া বাংলাদেশে বর্তমানে গ্রামীণ ব্যাংক অন্তর্ভুক্ত ১৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের লোন দিয়ে সহযোগিতা করে
গ্রামীণ ব্যাংক হতে শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা লোনের পরিমাণ
গ্রামীণ ব্যাংক থেকে শিক্ষা কেন্দ্রের জন্য লোন দেওয়া হচ্ছে তবে এখানে আনলিমিটেড লোন দেওয়া হচ্ছে না এখানে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ নির্দিষ্ট পরিমানটি আজকের আর্টিকেটে।
- এমএস/এমবিএ/এমএ ২ বছর মেয়াদি কোর্সের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা কালীন সর্বোচ্চ ৩৮ হাজার টাকা পাবেন।
- স্নাতকের শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা কালীন সর্বোচ্চ ৭৭ হাজার টাকা।
- ইঞ্জিনিয়ারিং এ ৪ বছর মেয়াদি কোর্সে সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টাকা।
- ইঞ্জিনিয়ারিং এ পাঁচ বছর মেয়াদি এমবিবিএস শিক্ষার্থীরা সর্বোচ্চ ১ লাখ ৫ হাজার টাকা করে এই ঋণ গ্রহণের সুযোগ পায়।
গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা লোনের যে সকল শর্ত রয়েছে
আপনি যদি গ্রামীণ ব্যাংকের কাছ থেকে লোন গ্রহণ করতে চান একজন শিক্ষার্থী হিসেবে তাহলে অবশ্যই আপনাকে বেশ কিছু শর্ত মেনে চলতে হবে তাহলে খুব সহজে আপনি গ্রামীণ ব্যাংক থেকে লোনটি গ্রহণ করতে পারবেন। অন্যথায় এসব পূরণ না করলে আপনাকে লোন দেওয়া হবে না অবশ্যই।
- পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না হলে, বিশেষ সেক্টরে অধ্যানরত ছাত্র হতে হবে।
- লোন মাসিক কিস্তিতে পূরণ করতে হবে।
- শিক্ষজীবন শেষ হলে সার্ভিস চার্জ দিতে হবে।
- গ্রামীণ ব্যাংকের শিক্ষ লোন পেতে হল গ্রামীণ ব্যাংকের একজন সদস্য হতে হবে অবশ্যই।
- সদস্য হবার সময়কাল ১ বছরের হতে হবে।
- লোন গ্রহীতা শিক্ষার্থীকে ২০থেকে২৫ বছর বয়সী ছাত্র হতে হবে।
- পাবলিক ইউনিভার্সিটির ছাত্র হতে হবে।
- ৫% সার্ভিস চার্জ।
গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষ লোনের সুবিধা
গ্রামীন ব্যাংক শিক্ষা লোনের অনেকগুলো সুবিধা রয়েছে। নিচে আমরা গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা লোনের সুবিধা তুলে ধরেছি।
- শিক্ষাজীবনে লোনন পরিশোধ করতে হয় না।
- গ্রামীণ ব্যাংকের এ লোনে শিক্ষার্থী যথাযথ সময়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করতে পারেন।
- চাপ কম থেকে।
- মাসিক কিস্তিতে লোন পরিশোধ করা যায়।
- ৫% সার্ভিস চার্জ।
- ঋণের পরিমান কম হওয়ায়, খুব তাড়াতাড়ি ঋণ পরিশোধ করা যায়।
Also Read:
- ব্র্যাক এনজিও লোন পদ্ধতি, লোন সুবিধা ও সুদের হার
- সোনালী ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম ও লোন ফরম
- কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম, ইন্টারেস্ট রেট ইত্যাদি
- ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন সুবিধা ও আবেদন পদ্ধতি
- ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস খোলার নিয়ম ও লাভ-ক্ষতি
- কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি ও সুযোগ-সুবিধা
গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা
গ্রামীণ ব্যাংকের সুবিধা রয়েছে অনেক বেশি গ্রামীণ ব্যাংকের লোন গ্রহণ করলে আপনি অনেক পরিমান সুবিধা পাচ্ছেন যা আসলে অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় সত্যি কথা বলতে গেলে অনেক বেশি সুবিধা দিচ্ছে যা আসলে সাধারণ ব্যাংকগুলোতে দিতে পারবে না। আর তাছাড়াও এই ব্যাংকটিতে আপনারা লোন গ্রহণ করলে খুব দ্রুত পরিমাণে শোধ করতে হবে এমনটি নয় আপনি আস্তে আস্তে ধীরে ধীরে সুবিধামত শোধ করতে পারবেন।
সর্বশেষঃ আজকের এই আর্টিকেলের সাহায্যে গ্রামীণ ব্যাংকের লোন সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে নিশ্চই অবগত হয়েছেন। আশা করছি, আর্টিকেলটি আপনাদের অনেকটা উপকারে এসেছে। গ্রামীণ ব্যাংকের লোন সম্পর্কিত কোন বিষয়ে জানার থাকলে অথবা মতামত থাকলে নিচের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।।