মাঝে মাঝেই আমাদের জীবনে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। সেগুলো হতে পারে পার্সোনাল সমস্যা কিংবা পারিবারিক সমস্যা। টাকার সমস্যা আমাদের প্রত্যেকেরই হয়ে থাকে। আর এই সমস্যা থেকে দূরীভূত হওয়ার জন্য মাঝে মাঝে আমাদের ছোট খাটো অ্যামাউন্টের লোন নেওয়ার প্রয়োজন হয়ে থাকে। কিন্তু ব্যাংক থেকে তো আর একদম ছোটখাট পরিমাণ লোন নেওয়া সম্ভব হয় না।
সেক্ষেত্রে বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় একটি প্রতিষ্ঠান বিকাশ লোন প্রদান করছে। একজন সাধারণ মানুষ চাইলে বিকাশ থেকে লোন গ্রহণ করতে পারবে। আর্টিকেলটিতে আমরা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যে বিষয়টি সম্পর্কে আলোচনা করতে চলেছি সেটি হচ্ছে বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায়, যারা সত্যিকার অর্থে বিকাশ থেকে লোন গ্রহণ করতে চাচ্ছেন তারা আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন এতে করে আপনার নিজের উপকার হবে।
বিকাশ লোন নীতিমালা
বিকাশ বাংলাদেশের অন্যতম সেরা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা হিসেবে পরিচিত। প্রাপ্ত এই বিকাশ অ্যাপ্লিকেশন আপনাকে সরাসরি লোন দিচ্ছে না। লোন দিচ্ছে মূলত সিটি ব্যাংক কিন্তু বিকাশ অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে।
দেশের যেকোন নাগরিক চাইলে বিকাশ অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যে আবেদন করলে সহজে লোন পেতে পারে। কিন্তু লোন পাওয়ার জন্য কিছু নীতিমালা অবশ্যই থাকছে যা পড়ুন সাপেক্ষে আপনি বা যে কেউ লোন গ্রহণ করতে পারবে সিটি ব্যাংক থেকে বিকাশ অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে নিজের বিকাশ একাউন্টে।
আপনি যেই লোন গ্রহণ করবেন সেই লোন সরাসরি আপনার সিটি ব্যাংক একাউন্টে নয় বরঞ্চ আপনার বিকাশ একাউন্টে ক্রেডিট হয়ে যাবে। কিন্তু তার জন্য অবশ্যই আপনার একটি সিটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা অত্যাবশ্যক। এতে করে দ্রুত সময়ের মধ্যে আপনি লোন পেতে পারেন।
অন্যদিকে আপনার বয়স ১৮ বছর না হলে আপনি এই লোন গ্রহণ করার সুযোগ পাবেন না। সর্বনিম্ন ০ টাকা থেকে বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত আপনি চাইলে বিকাশ অ্যাপ্লিকেশন থেকে লোন গ্রহণ করতে পারেন। বিকাশ থেকে লোন পেতে অবশ্যই আপনার দরকার হবে নিয়মিত লেনদেন।
যে ব্যক্তি নিয়মিতভাবে বিকাশ অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে লেনদেন করে থাকে একমাত্র সে চাইলে বিকাশ অ্যাপ্লিকেশন থেকে বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত লোন গ্রহণ করতে পারে। সময় তা সহকারে বিকাশ অ্যাপ্লিকেশনের কাছে ফেরত দিতে হবে। এবং এই লোন আপনি কতদিন পরে শোধ করতে চাচ্ছেন তা চাইলে বিকাশ অ্যাপ্লিকেশনকে জানাতে পারবেন।
আমরা যখন বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায় সম্বন্ধে নিচে আলোচনা করব তখন সেখানে আপনি ভালোভাবে লক্ষ্য করলেই দেখতে পারবেন সেখানে একটি সিলেক্ট করার অপশন থাকবে আপনি কত দিন পর লোন দিতে চাচ্ছেন ফেরত।
সে ক্ষেত্রে আপনি যদি বেশি সময় পর লোন পরি শোধ করতে চান আপনার জন্য চার্জ বেশি পড়বে। কিন্তু দ্রুত সময় যদি আপনি এই লোন পরিশোধ করে ফেলেন সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার জন্য ইন্টারেস্ট রেট অনেক কম রাখবে সিটি ব্যাংক।
আসল কথা হচ্ছে বর্তমান সময়ে অফলাইনে যেভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে কষ্ট করে আমাদের লোন নিতে হয় সেরকম ভাবে বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায় খুবই সোজা একটি প্রসেস। অবলম্বন করতে আপনাকে ঘরে বসে থেকেই সকল কার্যক্রম সম্পাদন করতে হবে। তার জন্য আপনার কোন ধরনের সহযোগী মানুষের প্রয়োজন হবে না কিংবা কোন দালালের দরকার হবে না। চলুন তাহলে আরও বিস্তারিত জেনে নিব বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায় সম্বন্ধে কিন্তু তার আগে অবশ্যই মনে রাখবেন আপনার দরকার হবে অবশ্যই বিকাশ থেকে লোন পাওয়ার যোগ্যতা, তা না হলে লোন পাবেন না।
বিকাশ থেকে লোন পাওয়ার যোগ্যতা
বিকাশ থেকে লোন পাওয়ার যোগ্যতা অবশ্যই দরকার আছে যদি আপনি খুব সহজে বিকাশ অ্যাপ থেকে লোন নিতে চান। আর বিকাশ থেকে লোন পাওয়ার জন্য আপনার দরকার হবে 18 বছরের উপর বয়স। যারা ১৮ বছরের নিচে বিকাশ অ্যাপ ব্যবহারকারী রয়েছেন অর্থাৎ ভোটার আইডি কার্ড ব্যতীত তারা চাইলেও লোন নিতে পারবেনা বিকাশ অ্যাপ্লিকেশন থেকে।
অন্য দিয়ে যারা নিয়মিতভাবে বিকাশ অ্যাপ্লিকেশন এর ট্রান্সলেশন করে না বা লেনদেন করে না তারা চাইলেও বিকাশ অ্যাপ্লিকেশন থেকে লোন গ্রহণ করার কোন সুযোগই পাবে না। যদি আপনি নিয়মিতভাবে বিকাশ অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করেন এবং লেনদেন করে থাকেন তাহলে সহজে আপনি লোন পেতে পারেন।
বিকাশ থেকে কত টাকা লোন নেওয়া যায়
বিকাশ থেকে সর্বনিম্ন শূন্য টাকা থেকে সর্বোচ্চ বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত লোন নেওয়া যায়। যে কোন মানুষ বিকাশ থেকে লোন পাওয়ার যোগ্যতা সাপেক্ষে খুব সহজেই বিকাশ থেকে লোন নিতে পারে।
তাহলে আর দেরি কিসের বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম জেনে নিন। এবং খুব সহজেই নিজের একাউন্টে লোন গ্রহণ করে ফেলুন যদি আপনার প্রয়োজন হয়ে থাকে। আরেকটি কথা যারা অপ্রয়োজনে লোন নিতে চাচ্ছেন তারা ভুলেও এই লোনের জন্য আবেদন করবেন না। কেননা লোন একটি সিরিয়াস ব্যাপার এবং এর মাধ্যমে আপনি যদি ত্রুটি করেন তাহলে অবশ্যই আপনার কারাদণ্ড হতে পারে।
বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায়
বিকাশ থেকে লোন গ্রহণ করতে বা বিকাশ থেকে লোন পেতে আপনি সবার আগে অ্যাপ্লিকেশনে প্রবেশ করুন। এরপর নিজের পিন কোডটি দিয়ে বিকাশ অ্যাপ্লিকেশন লগইন করুন।
থ্রি ডট মেনু থেকে লোন নামক একটি অপশন রয়েছে সেখানে ক্লিক করুন। আবার সেখান থেকে আপনি সিলেক্ট করতে পারবেন কত টাকা লোন নিতে চাচ্ছেন। যদি আপনি যোগ্য প্রাপ্তি হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনি সেখানে নাম্বার অর্থাৎ কত টাকা নিতে চাচ্ছেন সে এমাউন্ট দিতে পারবেন।
আপনি যদি যোগ্য প্রার্থী না হয়ে থাকেন অর্থাৎ আপনাকে লোন দেওয়া হবে না বিকাশের পক্ষ থেকে এমনটা যদি হয়ে থাকে তাহলে আপনি সেখানে কোন ধরনের কাজই করতে পারবেন না। চলুন ভেবে নিলাম যে আপনি লোন গ্রহণ করার যোগ্য প্রার্থী প্রসেসটি অবলম্বন করুন।
এবার আপনি সেখান থেকে আপনার কত টাকা দরকার রয়েছে লোন নেওয়ার সেইটি আপনি নির্ধারিত করুন। অতঃপর আপনি তার পরে নেক্সট বাটনে চাপ দিন। তারপর শেষে আপনি আপনার পিন নম্বরটি দিয়ে দিন। এবং সকল নীতিমালা মেনে চলেছেন তা যাচাই করে নিন এবং তারপর লোনের জন্য আবেদন করুন।
২৪ ঘন্টার মধ্যে আপনার একাউন্টে বা বিকাশ একাউন্টে লোন চলে আসবে আশা করি। এই প্রচার যদি সঠিকভাবে অবলম্বন করেন তাহলে অবশ্যই বিকাশ থেকে লোন আপনার জন্য।
Also Read:
- ব্র্যাক এনজিও লোন পদ্ধতি, লোন সুবিধা ও সুদের হার
- সোনালী ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম ও লোন ফরম
- কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম, ইন্টারেস্ট রেট ইত্যাদি
- ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন সুবিধা ও আবেদন পদ্ধতি
- ইসলামী ব্যাংক থেকে খুব সহজে লোন নেওয়ার নিয়ম
- কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি ও সুযোগ-সুবিধা
বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার অসুবিধা
প্রতিটি কাজের সুবিধা এবং অসুবিধা থাকবে এ বিষয়টি আপনাদের সকলেরই বোঝা উচিত। এমনি বিকাশে লোন নিতে গেলে অবশ্যই কিছু অসুবিধার মধ্যে আপনি পড়তে পারেন যে বিষয়টি আপনাকে মাথায় রাখতে হবে।
সবচেয়ে বড় অসুবিধা হচ্ছে এই অ্যাপ্লিকেশন থেকে লোন নেয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই যোগ্য প্রার্থীগতভাবে যা সবাই পারেনা। আপনি যে লোন পাবেন তার কোন নির্ধারিত নেই। যেমন আমি গত মাসে প্রায় আশি হাজার টাকার বেশি ট্রান্সলেশন করেছিলাম বিকাশ দিয়ে তবুও আমাকে লোন দিচ্ছে না।
এখন আপনি পাবেন নাকি পাবেন না সেটি নির্ভর করছে বিকাশে এর উপর এবং আপনার ভাগ্যের উপর। এবং আপনার একাউন্ট যত বেশি পুরানো হবে তত বেশি লোন পাওয়ার যোগ্যতা আপনি অর্জন করবেন। তাই সবার আগে যোগ্যতা অর্জন করুন এবং তারপরে লোন পাওয়ার চিন্তা করুন।
তারপর আরেকটি সমস্যা হচ্ছে আপনি এখানে বিশ হাজার টাকার বেশি লোন নিতে পারবেন না। অর্থাৎ কারো যদি বিশ হাজার টাকা বেশি অর্থাৎ ত্রিশ হাজার বা ৫০০০০ বা ১ লক্ষ টাকার লোনের প্রয়োজন হয় সে ক্ষেত্রে সে চাইলেও বিকাশ অ্যাপ্লিকেশনে আবেদন করতে পারে না কিংবা আবেদন করার কোন অপশন খুঁজে পায় না।
এই অ্যাপ্লিকেশনে একদম ম্যাক্সিমাম ২০ হাজার টাকা অ্যামাউন্ট এর লোন পাওয়া যায়। তাই যারা বেশি পরিমাণ লোন নিতে চাচ্ছেন তাদের জন্য নিশ্চয়ই এই অ্যাপ্লিকেশনটি নয় মোটেও। কিন্তু আমি আগেই বলেছিলাম যারা টুকটাক কাজের জন্য কিংবা ছোটখাটো এমাউন্টের লোন নিতে চাচ্ছেন তাদের জন্য বিকাশ থেকে লোন সবচেয়ে সেরা এবং সবচেয়ে সুবিধা জনক।
সর্বশেষঃ আর্টিকেলটি সঠিকভাবে পড়তে পারলে এবং আমাদের দেওয়া সম্পূর্ণ বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায় অবলম্বন করলে নিশ্চয়ই আপনি বিকাশ থেকে লোন গ্রহণ করতে পারেন কোন ঝামেলা ছাড়াই। যদি কোন ক্ষেত্রে কোন সমস্যা হয় এবং আপনার সহযোগিতার প্রয়োজন হয়ে থাকে তাহলে কমেন্ট সেকশনটিতে আপনি কমেন্ট করলে আমরা দ্রুত সহযোগিতার চেষ্টা করব।