আপনি যদি মালয়েশিয়া যেতে চান তাহলে আপনাকে জানতে হবে সবার আগে মালয়েশিয়া যেতে কত বয়স লাগে ও মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে। সাধারণ তথ্য গুলো না জেনে শুধু দালাল দ্বারা মালয়েশিয়া যেতে চাইলে নানা সমস্যায় পড়তে পারেন। তাই আজকের আলোচনায় আমরা এই দুইটি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানার পাশাপাশি কিভাবে ভিসা পাওয়া যায় সে সম্পর্কেও জেনে নিবো।
মালয়েশিয়া যেতে কত বয়স লাগে
বর্তমানে কাজের জন্য বাংলাদেশ হতে অসংখ্য মানুষজন মালয়েশিয়া যেতে চাই। যারা কাজের জন্য মালয়েশিয়া যেতে চাই তাদেরকে কমপক্ষে ২১ বছর থেকে ৪০ বছরের মধ্যে হতে হবে। মূলত ২১ বছরের উপরে যারা রয়েছে তারা চাইলে মালয়েশিয়ায় কাজের জন্য যেতে পারবে।
আপনি যে ভিসা কোম্পানির মাধ্যমে যেতে চাচ্ছেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আপনার থেকে ৬৫ হাজার টাকা থেকে অধিক টাকা নিতে পারে ভিসার জন্য। এবং আপনি যে ধরনের ভিসা চাইবেন তারা আপনাকে সেই ধরনের ভিসা দিবে। আর কাজের জন্য যেতে চাইলে অবশ্যই একটি ওয়ার্কিং ভিসা নিবেন। এর ফলে মানুষের ওয়ার্কিং পার্মিশন পাবেন এবং সহজে কাজ খুঁজে পাবেন।
তবে আগে থেকেই যদি অনলাইনে মাধ্যমে কাজের জন্য আবেদন করে রাখেন তাহলে তো কথাই নেই। আপনার ভিসা আরো দ্রুত হয়ে যাবে যদি কোম্পানি আপনাকে সহযোগিতা করে। আমরা এতক্ষণ বললাম কাজের ভিসার কথা। তবে যারা স্টুডেন্ট রয়েছেন, পড়াশোনা করার জন্য আপনারা যেতে চাচ্ছেন তাদের জন্য ভিসা 18 বছর হলেই পাওয়া যাবে। তবে ৩৫ বছরের অধিক হলে তাদেরকে স্টুডেন্ট ভিসা দেওয়া হবে না।
মূল কথা মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য মোটামুটি ২১ বছর বয়স হতে হয়। তবে আপনি যদি একজন ছাত্র হন তাহলে পড়াশোনার জন্য এর থেকে কম বয়সেই যেতে পারবেন। শুধুমাত্র তাদের কমপক্ষে ২১ বছর হতে হবে যারা কাজের জন্য যেতে চান। অর্থাৎ, ২১ বছর হলেই কাজের জন্য মালয়েশিয়ার ওয়ার্কিং ভিসা পাবে।
মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে
মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগবে কিংবা লাগে এটা নির্ভর করে আপনার যাতায়াত ব্যবস্থা, ভিসার ধরন ইত্যাদির উপর। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার জন্য খরচ হতে পারে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এমন তথ্যটি জানিয়েছেন। অর্থাৎ এর মধ্যেই আপনার ভিসা খরচ এবং যাতায়াত ব্যবস্থার খরচ থাকবে।
মালয়েশিয়া যেতে বর্তমান সময়ে ৮০ হাজার টাকা থেকে তিন লক্ষ বা চার লক্ষ টাকার মতন খরচ হতে পারে। টোটাল খরচ হবে এই ৮০ হাজার টাকা। অর্থাৎ এর মধ্যে ভিসা এবং অন্যান্য সকল যাবতীয় কাজ কর্ম থাকবে।
মালয়েশিয়া ভিসা কিভাবে পাব?
মালয়েশিয়া ভিসা সহজে পেতে হলে আপনাকে এজেন্টের সাহায্য নিতে হবে। তার জন্য অবশ্যই এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে বেশ কিছু ভিসা কোম্পানি রয়েছে যেগুলোর সাহায্য যেতে পারেন। তারা আপনাকে মালয়েশিয়ার ভিসা দিতে পারবে। তবে যাই বলেন না কেন টোটাল খরচ ৭৫হাজার টাকা থেকে শুরু হবে।
মালয়েশিয়া ভিসার ধরন, সময়, মেয়াদ
মালয়েশিয়ার ভিসার ধরন হচ্ছে টোটাল পাঁচটি। অর্থাৎ, পাঁচ ধরনের ভিসার মধ্যে যেকোনো একটি ভিসা দিয়েই মালয়েশিয়া যেতে পারবেন। আর সেগুলো হচ্ছে –
- মালয়েশিয়া এন্ট্রি ভিসা
- মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসা
- মালয়েশিয়া এম্প্লয়মেন্ট ভিসা
- মালয়েশিয়া মেডিকেল ভিসা ও
- মালয়েশিয়া বিজনেস ভিসা।
মালয়েশিয়া এন্ট্রি ভিসা
মালয়েশিয়ায় যেতে হলে সব চাইতে সোজা এবং সব চাইতে ভালো ভিসা হচ্ছে মালয়েশিয়া এন্ট্রি ভিসা। এই বিষয়টি প্রসেসিং হতে মাত্র ৫ থেকে ৭ দিনের মতন সময় লাগে এবং এ ভিসা করতে গেলে কোন বয়স ম্যাটার করে না।
মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসা
পড়াশোনার ক্ষেত্রে যারা মালয়েশিয়া যেতে চাচ্ছেন তাদের জন্য অন্যতম ভিসা মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসা। আর ভিসাটির মেয়াদ আপনার পড়াশুনা শেষ করা পর্যন্ত থাকবে। অর্থাৎ, আপনি যতদিন পড়ালেখা করবেন ততদিন পর্যন্ত এই ভিসার মেয়াদ থাকবে। তবে স্টুডেন্ট ভিসা এই কারণেই প্রসেসিং হতে ২০ থেকে ৩০ দিন সর্বনিম্ন সময় লাগে।
মালয়েশিয়া এম্প্লয়মেন্ট ভিসা
এ ভিসাটি প্রসেসিং হতে ৩০ দিনের অধিক সময় লাগতে পারে। যারা মূলত মালয়েশিয়াতে কাজের জন্য যেতে চান তাদের জন্য মালয়েশিয়া এমপ্লয়মেন্ট ভিসা গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে আপনি অনেক দিনের জন্য ভিসা পাবেন, যাতে করে আপনি মালয়েশিয়াতে চাকরি করতে পারেন।
মালয়েশিয়া মেডিকেল ভিসা
চিকিৎসা ক্ষেত্রে কিংবা চিকিৎসার যেকোনো জরুরী ক্ষেত্রে যেতে চাইলে আপনি মালয়েশিয়াতে মেডিকেল ভিসায় যেতে পারেন। তবে এই ভিসার মেয়াদ ১ থেকে ৫ মাসের মতো। এবং এই ভিসা পেতে সময় লাগে সর্বোচ্চ ১ দিন। এই ভিসাটি পেতে অনেক কম সময় লাগে এই কারণে যাতে করে খুব তাড়াতাড়ি রোগী মালয়েশিয়াতে যেতে পারে তার কাঙ্খিত চিকিৎসার জন্য। এবং এই ভিসার মেয়াদ এই কারণে কম রাখা হয়েছে যাতে করে চিকিৎসা করে ব্যক্তি তার বাড়িতে ফিরে আসতে পারে।
মালয়েশিয়া বিজনেস ভিসা
ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে অর্থাৎ আপনি যদি মালয়েশিয়ায় গিয়ে ব্যবসা করতে চান তাহলে আপনাকে মালয়েশিয়া বিজনেস ভিসা করতে হবে। তাহলে দীর্ঘকালীন মালয়েশিয়ায় গিয়ে ভালো পরিমাণ বিজনেস করতে পারবেন। বিজনেস ভিসা পেতে দশ দিনের মতন সময় লাগে। এবং এই ভিসার মেয়াদ থাকে পাঁচ মাসের মত। সাধারণত বিজনেস অথবা যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক কাজে এই ভিসা নিতে পারেন। তবে দীর্ঘকালীন ব্যবসা করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই এন্ট্রি ভিসা নেওয়া উচিত।
সর্বশেষঃ উপরের অলোচিত বিষয় মালয়েশিয়া যেতে কত বয়স লাগে, মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এখন আপনি মালয়েশিয়া যেতে চাইলে আপনার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আর্টিকেলে উল্লেখিত বিষয় সম্পর্কে আপনার কোন ধরনের মতামত কিংবা জানার থাকলে নিচের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।।