আমাদের আজকের লেখার মধ্যে আপনারা জানতে পারবেন কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত। অনেকে আছেন যারা কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান কিন্তু কিভাবে কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিতে হবে কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে না জানার কারণে কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারেন না তাদের জন্যই মূলত আমাদের আজকের আর্টিকেল। আজকের এই আর্টিকেলটি আপনারা মনোযোগ সহকারে পড়লে আশা করি কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে পরিপূর্ণ ভাবে ধারণা পেয়ে যাবেন। তাহলে চলুন কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিই।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক লোন ২০২৩
কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়মঃ আপনি যদি কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান তাহলে নিচের কাগজপত্র গুলো অবশ্যই আপনার দরকার হবে।
- আপনার একটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- এনআইডি কার্ডের ফটোকপি দিতে হবে।
- আপনার কতটুকু পরিমাণে জমি রয়েছে সেটার প্রমাণ দিতে হবে ব্যাংকে / অর্থাৎ জমির দলিল দিতে হবে।
- আগে থেকে যদি কোন ব্যাংকের ডকুমেন্ট থাকে তাহলে সেটা দিতে হবে।
- আপনি যে খাজনা দেন জমির সেটার কাগজপত্র গুলো দেখাতে হবে ব্যাংকে।
কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি
কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য যে সমস্ত কাগজপত্র গুলো আপনাদের অবশ্যই দরকার হবে সেগুলো আমরা উপর আলোচনা করেছি! আশা করি সেগুলো সম্পর্কে আপনারা জেনে গিয়েছেন ইতিমধ্যে। আপনাদের অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে, কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিলে কি কি সুযোগ সুবিধা পাব?
কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার সুযোগ সুবিধা-
- কৃষি ব্যাংক থেকে আপনি শস্য ঋণ নিতে পারবেন।
- আপনি যদি মাছ চাষ করার জন্য ঋণ নিতে চান তাহলে সেটা ও নিতে পারবেন।
- প্রাণী সম্পদ ঋণ নেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
- চাষাবাদ যন্ত্রপাতি কেনার জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবেন।
কৃষি ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট রেট
ব্যাংক থেকে কৃষি ঋণ নেওয়া হলে সুদের হার ৮ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে তার কারণ এখন বর্তমান সময়ে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া অন্য যেকোনো ঋণে সুদের হার সর্বোচ্চ পরিমাণে ৯ শতাংশ পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে বাংলাদেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি নীতি রয়েছে সেটা হল,যেটার মাধ্যমে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর চাইলে তাদের টোটাল কৃষি ঋণের ৭০ শতাংশ অন্যান্য সকল চ্যানেলের মাধ্যমে বিতরণ করে দিতে পারবে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক লোন সিস্টেম
কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিতে চাইলে যে সমস্ত কাগজপত্র লাগবে,
কৃষি ব্যাংকে যখন আপনি লোনের জন্য আবেদন করবেন তখন আপনার এই সমস্ত জিনিস গুলো অবশ্যই সাথে নিয়ে যেতে হবে এই গুলো যদি না দেখাতে পারেন তাহলে আপনি ঋণ নিতে পারবেন না এই বিষয়টা মাথায় রাখবেন। আর এই শর্তগুলো কিন্তু শুধু মাত্র যে আমাদের দেশের কৃষি ব্যাংকে রয়েছে বিষয়টা মোটে ও সেরকম নয় বাংলাদেশের সকল ব্যাংকের এই নিয়ম রয়েছে।
১। আপনাদের মধ্যে যারা লোন নিবে তাদের এনআইডি কার্ড অথবা জাতীয় পরিচয় পত্র দিতে হবে।
২। কৃষি কার্ড
৩। পাসপোর্ট সাইজের ছবি দিতে হবে তিন কপি।
৪। জামিনদাতা যে ব্যক্তি হবেন তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র/স্মার্ট কার্ড এবং ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।
চার্জ এবং ডকুমেন্টসমূহ
১। ডিপি নোট স্ট্যাম্প (সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক দেখাতে হবে)
২। লেটার অব হাইপোথিকেশন (স্ট্যাম্প লাগবে না)
৩। বিতরণপত্র
৪। ব্যবস্থাপত্র
৫। শস্য বন্ধকী দলিল
৬। জামিন দাতা যিনি হবেন তার প্রদত্ত লেটার অব গ্যারান্টি।
আবেদন পত্র দেওয়া এবং প্রক্রিয়াকরণ ফি সমূহ
কৃষক যখন আবেদন করবে লোনের জন্য তখন তাকে শুধু মাত্র ১০ টাকা প্রাথমিক জমার বিনিময়ে ব্যাংকের শাখাতে গিয়ে একটি সঞ্চয়ী হিসাব খুলে নিতে হবে। সকল ধরনের কৃষি এবং পল্লী ঋণে নির্ধারিত সুদ ব্যতীত অন্য কোন নামে কোন প্রকারের চার্জ, প্রসেসিং ফি/মনিটরিং ফি এই সমস্ত বিষয় গুলোর নামের কোন টাকা পরিশোধ করা লাগবে না।
জামিনদার সংক্রান্ত যে তথ্যগুলো রয়েছে সেগুলো নিচে দেওয়া হল –
- আপনার নিজের এলাকার স্থানীয় চেয়ারম্যান/মেম্বার/স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ রয়েছেন তাদেরকে আপনি জামিনদার হিসেবে নিতে পারেন।
- সরকারী-বেসরকারী স্কুল/কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষকদের জামিনদার হিসেবে ও নিতে পারেন।
কৃষি ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায়
কৃষি ব্যাংক লোন ২০২৩/ শস্য ঋণের সুবিধা এবং শর্তসমূহ –
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক শস্য ঋণ দিয়ে থাকে। কৃষি ব্যাংকের এই লোনের কিছু উল্লেখযোগ্য দিক নিচে তুলে ধরা হলো।
- মোট বার্ষিক ঋণের জন্য বরাদ্দকৃত ঋণে ৬০ ভাগ শস্যের জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
- আর এটা সব ধরনের ফসলের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা রয়েছে আপনি যে ধরনের ফসল নিয়ে কাজ করতে চান না কেন আপনি সেই ফসলের জন্য এই ঋণ এর আওতাভুক্ত হবেন।
- সমস্ত কিছুর নির্দিষ্ট একটা নিয়ম রয়েছে।
- আর কৃষি ব্যাংক তারা তাদের নিয়ম অনুযায়ী ঋণ প্রদান করে থাকে।
- সুদের ৯ ভাগ।
- আর এটা পরিবর্তনশীল যেকোনো সময় পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে।
- যারা কৃষক রয়েছেন তারা এই লোন এর আওতাভুক্ত তারা অবশ্যই এই ঋণ পাবেন।
- বার্ষিক হিসাবে লোন মঞ্জুর করা হয়ে থাকে।
- ঋণগ্রহীতাকে ক্রেডিট পাসবুক দেওয়া হয়ে থাকে।
কৃষি ব্যাংকের মৎস ঋণ
কৃষি ব্যাংক থেকে মংস্য লোন প্রদান করে থাকে। যেসমস্ত কাজের জন্য আপনারা মৎস ঋণ নিতে পারবেন সেগুলো নিচে দেওয়া হল।
- পুকুর খনন করতে চাইলে।
- পুনরায় আবার পুকুর খনন করেন সেক্ষেত্রে,
- জলাভূমির উন্নয়ন নিশ্চিত করতে চাইলে লোন পাবেন।
- মৎস হ্যাচারি।
- নতুন করে যদি মৎস্য প্রকল্প আপনি চালু করতে চান তাহলে সেক্ষেত্রেও ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন।
- মাছ চাষ করতে চাইলে সে ক্ষেত্রে আপনি লোন নিতে পারবেন।
- পুকুরে মাছ চাষ করার ক্ষেত্রে
- ট্যাংকেম মাছ চাষ।
- আপনি যদি নতুন করে পুকুর খনন করে তারপরে মাছ চাষ করতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে ও কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন।
- আগে থেকে পুকুর রয়েছে এমন জায়গায় যদি আপনি পুকুরটি খনন করে সেখানে মাছ চাষ করতে চান তার জন্য ও লোন নিতে পারবেন।
Also Read:
- ব্র্যাক এনজিও লোন পদ্ধতি, লোন সুবিধা ও সুদের হার
- সোনালী ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম ও লোন ফরম
- কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম, ইন্টারেস্ট রেট ইত্যাদি
- ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন সুবিধা ও আবেদন পদ্ধতি
- ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস খোলার নিয়ম ও লাভ-ক্ষতি
- কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি ও সুযোগ-সুবিধা
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক লোন অ্যাপস
- বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক লোন অ্যাপস ডাউনলোড করতে হলে আপনাকে সবার প্রথমে google প্লে স্টোরে যাওয়া লাগবে / তারপরে এই লিংকে ক্লিক করে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের অফিসিয়াল মোবাইল অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিতে হবে।
- বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের অ্যাপসটি ডাউনলোড করে নেওয়ার পরে আপনাকে আপনার মোবাইল ফোনে অ্যাপটিকে ইনস্টল করে নিতে হবে।
- ইনস্টল হয়ে যাওয়ার পরে,আপনার মোবাইল ফোনে অ্যাপসটি ওপেন করতে হবে।
- অ্যাপটি ওপেন করার পরে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সকল সেবা সমূহ গুলো আপনারা দেখতে পারবেন।
- আর এখন আপনি খুব সহজেই এই মোবাইল অ্যাপসটির মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে লোনের জন্য আবেদন করার কাজটি সম্পন্ন করতে পারবেন।
পরিশেষেঃ তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম বা কীভাবে কৃষি ব্যাংক থেকে সঠিক পদ্ধতিতে আপনারা লোন নিতে পারবেন এবং কি কি কাগজপত্র আপনাদের ব্যাংক লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে দরকার হবে সেগুলো সম্পর্কে জানতে পারলেন। আর এই রকমের বিভিন্ন নিত্য নতুন তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।।