বাংলা সাহিত্যের একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র হুমায়ূন আহমেদ। তিনি অসংখ্য জনপ্রিয় গল্প, উপন্যাস, কবিতা আমাদেরকে উপহার দিয়েছেন। তাইতো আমরা অনেকে অতিআগ্রহে হুমায়ূন আহমেদের লেখা গল্প, উপন্যাস ও সায়েন্স ফিকশন বই খুঁজে থাকি। এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে হুমায়ূন আহমেদ সংক্ষিপ্ত পরিচিতি, হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস, হুমায়ূন আহমেদ বই, হুমায়ূন আহমেদ গল্প সম্পর্কে। আশা করছি আর্টিকেলটি আপনাদের অসংখ্য ভালো লাগবে। এছাড়া হুমায়ূন আমাদের লেখা গল্প, উপন্যাস, সায়েন্স ফিকশন বই নিয়ে পড়ার পাশাপাশি ডাউনলোড করার সুযোগ থাকছে।
হুমায়ূন আহমেদ
শুধু বাংলা সাহিত্য অনুরাগীরাই নয়, বাংলাদেশে সাহিত্যমনা নয় তবুও এমন কাউকে হয়তো খুজে পাওয়া যাবে না যিনি হুমায়ূন আহমেদের নাম একবারও শুনেননি। হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক ও চিত্রপরিচালক বললে মোটেও ভুল হবে না। তার মতো জনপ্রিয়তা ও পাঠকপ্রিয়তা হয়তো বাংলাদেশে দ্বিতীয় কোনো লেখক পাননি।
বইমেলায় হুমায়ূন আহমেদের বই প্রকাশ হওয়ার সাথে সাথেই শেষ হয়ে গিয়েছিল এমন নজির কয়েকবার দেখা দিয়েছিল। এছাড়া জনপ্রিয় গোয়েন্দা চরিত্র শার্লক হোমস এর জনক স্যার আর্থার কেনান ডয়েলের পর হুমায়ূন আহমেদ দ্বিতীয় লেখক যার চরিত্রের কারণে রাজপথে সাধারণ জনগণ বিক্ষোভ মিছিল করতে নেমে পড়েছিল।
তার জনপ্রিয়তা আসলে কতটুকু তা বলে শেষ করা সম্ভব নয়। এসব জনপ্রিয়তার মূল কারণ হচ্ছে তার জাদুকরী লিখনী। এছাড়া তার চিত্রপরিচালনায় অসামান্য প্রতিভা আমরা দেখেছি ঘেটু পুত্র কমলা, শ্রাবণ মেঘের দিন, শ্যামল ছায়া ইত্যাদি চলচিত্রে।
হুমায়ূন আহমেদের বই
হুমায়ূন আহমেদ তার সাহিত্য জীবনে তিন শতাধিকের উপরে বই লিখেছেন। লিখেছেন উপন্যাস, ছোট গল্প, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, রম্যরচনা, ভ্রমণকাহিনী, অনুবাদ, শিশুসাহিত্য, কবিতার বই ইত্যাদি। এছাড়া ইতিহাস নির্ভর বই লিখেও তিনি সুনাম কুড়িয়েছেন।
“হিমু” ও “মিসির আলি” তার লেখা দুটি জনপ্রিয় সিরিজ। অনেকে আবার “শুভ্র” সিরিজের নামও জুড়ে দেন। এই সিরিজের বইগুলো যেন আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে। কিন্তু এই বইগুলোই হুমায়ূন আহমেদের সেরা বই নয়। মধ্যাহ্ন, জোছনা ও জননীর গল্প, মাতাল হাওয়া, লীলাবতী, কবি, বাদশাহ নামদার ইত্যাদি বইগুলো বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।
“নন্দিত নরকে” তার প্রকাশিত হওয়া প্রথম উপন্যাস। এই শুরু, তারপর আর থামেননি। একে একে লিখে ফেলেন শতাধিক উপন্যাস ও গল্পের বই। হুমায়ূন আহমেদের বই প্রকাশ পাওয়া মানেই নিমিষেই আউট অফ স্টক। ২০১২ সালে এই কিংবদন্তি ইন্তেকাল করলেও আজও তার জনপ্রিয়তা কমেনি, বরং তাকে এখনো বাংলা সাহিত্য স্মরণ করে রেখেছে।
আরও পড়ুন :
হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস
তিন শতাধিক বইয়ের মধ্যে হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস লিখেছেন সবচেয়ে বেশি। মূলত তাকে একজন ঔপন্যাসিক হিসেবে অনেকে বিবেচিত করে থাকেন। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় উপন্যাস তার হাত থেকেই লেখা। জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাসগুলো হচ্ছে–
- মধ্যাহ্ন
- বহুব্রীহি
- মেঘের ছায়া
- শঙ্খনীল কারাগার
- এই শুভ্র! এই
- শুভ্র
- শুভ্র গেছে বনে
- নিশীথিনী
- নিষাদ
- অন্য ভুবন
- বৃহন্নলা
- জোছনা ও জননীর গল্প
- মাতাল হাওয়া
- লীলাবতী
- কবি
- বাদশাহ নামদার
- দরজার ওপাশে
- হিমু
- কোথাও কেউ নেই
- পারাপার
- এবং হিমু
- হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম
- হিমুর দ্বিতীয় প্রহর
- হিমুর রূপালী রাত্রি
- এবং একজন হিমু কয়েকটি ঝিঁ ঝিঁ পোকা
- আগুনের পরশমণি
- দারুচিনি দ্বীপ
- প্রথম প্রহর
- এইসব দিনরাত্রি
- রূপালী দ্বীপ
হুমায়ূন আহমেদ গল্প
শুধু উপন্যাসই নয়, হুমায়ুন আহমেদের গল্প সমানভাবে পাঠক মহলে জনপ্রিয়। তার লেখা গল্পগুলো যেন জীবনের একটি ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে লেখা হয়ে থাকে। একেকটা গল্প একেক স্বাদের এবং প্রতিটি গল্পই আরেকটি থেকে আলাদা।
হুমায়ূন আহমেদের গল্পগুলো পড়লে মনে হবে, জীবনটা কতোই বাস্তবভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন হুমায়ূন আহমেদ।
কিছু হুমায়ূন আহমেদের গল্পের বইয়ের নাম দেখে নিন–
- প্রেমের গল্প
- অদ্ভুত সব গল্প
- হিজিবিজি
- গল্পসমগ্র
আরও পড়ুন :
হুমায়ূন আহমেদের সায়েন্স ফিকশন বই
হুমায়ূন আহমেদ বেশ কিছু সায়েন্স ফিকশন বা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী লিখেছেন। সায়েন্স ফিকশন আসলে এক ধরণের উপন্যাস বা গল্প যা বৈজ্ঞানিক ভিত্তির উপর আশ্রয় করে লেখা হয়। তার লেখা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীগুলো পাঠক সমাজে সমাদৃত হয়েছে। “তোমাদের জন্য ভালোবাসা” হুমায়ূন আহমেদের লেখা প্রথম সায়েন্স ফিকশন, কিন্তু এরপরে তিনি একে একে লিখে গেছেন বেশ কয়েকটি সফল সায়েন্স ফিকশন। তার লেখা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীগুলোর নাম–
- শূন্য
- দ্বিতীয় মানব
- ওমেগা পয়েন্ট
- কুহক
- তোমাদের জন্য ভালোবাসা
- ইরিনা
- অনন্ত নক্ষত্র বীথি
- ফিহা সমীকরণ
- ইমা
- তারা তিনজন
বাংলা সাহিত্যের এই শক্তিমান লেখকের ভক্তকূল বাংলাদেশে সুবৃহৎ। কোন ক্ষেত্রে তার হাত পড়েনি? হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস, গল্প, ভ্রমণকাহিনী ছাড়াও রম্যরচনা, নাটক, চলচিত্র ইত্যাদিতেও সমান তালে এগিয়ে গেছেন। এছাড়া অসামান্য প্রতিভার অধিকারী হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের একজন অধ্যাপক। পরবর্তীতে চিত্রপরিচালনার কাজে সময় দিতে তিনি অধ্যাপনার চাকরি ছেড়েছিলেন। সাহিত্যে অবদান রাখায় একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ইত্যাদি সম্মাননা পেয়েছেন।
২০১২ সালে মৃত্যুর পরেও হুমায়ূন আহমেদ বাংলার পাঠক সমাজে সমাদৃত। তার বইগুলোর এখনো ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। নিঃসন্দেহে ভবিষ্যতেও বাংলা সাহিত্যের পাঠক সমাজের তৃষ্ণা হুমায়ূন আহমেদের বইগুলো মেটাবে। হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস, গল্প, কবিতা ও সায়েন্স ফিকশন pdf বই বিডিইবুকস থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।।